চলুন জেনে নিই প্লাস্টিকের বিকল্প বায়োপ্লাস্টিক সমন্ধে - Storybd3

Latest

বিজ্ঞান চর্চা কেন্দ্র

শুক্রবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২০

চলুন জেনে নিই প্লাস্টিকের বিকল্প বায়োপ্লাস্টিক সমন্ধে



আমরা যদি বলি, আমাদের বর্তমান দুনিয়াটা প্লাস্টিকের, বিশ্বাস করুন, একদমই অত্যুক্তি হবে না। চারপাশে একবার তাকান, দেখুন, কতগুলাে জিনিস প্লাস্টিকের। একটু হিসাব করলে আপনি অবাকই হবেন। এই লেখাতে তার হিসাব না দিয়ে তালিকা করার দায়িত্বটা আপনাকেই দিই। আপনার দৈনন্দিন জীবনে কোথায় কোথায় প্লাস্টিক ব্যবহার করছেন? এবার অবাক করা কথাটা বলি। এই যে এত এত প্লাস্টিক, এর কোনােটাই কিন্তু মাত্র ১০০ বছর আগেও ছিল না। প্লাস্টিকের যা কিছু, সবই তৈরি মূলত গত ১০০ বছরেই। তার মানে, ১০০ বছর আগের দুনিয়ায় গেলে আজকের অধিকাংশ ম্যাটেরিয়ালই আপনি দেখতে পাবেন না! এত এত কিছু হয়তাে আমরা পেতামই না প্লাস্টিক না থাকলে।

কিন্তু প্লাস্টিকের গুণাগুণ বর্ণনা করতে শুরু করলে আপনি নিশ্চয় বিরক্ত হবেন। কারণ প্লাস্টিকের ক্ষতিকর দিকগুলাে তাে আপনি জানেনই। কিন্তু কী করবেন? প্রতিদিনকার সবকিছু তাে আর বাদ দিয়ে দিতে পারবেন না।

সারা পৃথিবীতে প্রতিবছর কী পরিমাণ প্লাস্টিক উৎপাদিত হয়, শুনলে কিন্তু ভয়ই লাগে। ২০১৪ সালেই উৎপাদন করা হয়েছিল ৩১ কোটি ১০ লাখ মেট্রিক টন। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম হিসাব করে দেখিয়েছে, ২০৫০ সালে এই উৎপাদন তিন গুণ। হবে! এখনই দুনিয়া ভেসে যাচ্ছে প্লাস্টিকে। তখন কী হবে?

প্লাস্টিকের বড় একটা অংশই কিন্তু রিসাইকেল করা যায়। তাতে কী? মাত্র ১৫ শতাংশ প্লাস্টিক বিশ্বজুড়ে রিসাইকেল করা হয়। বাকিটা বেশির ভাগই পুড়িয়ে দেওয়া হয়, মাটির নিচে পুঁতে রাখা হয় বা সােজা পরিবেশে ফেলে দেওয়া হয়, যার বিশাল একটা অংশ গিয়ে পড়ে সাগরে। কোটি কোটি মেট্রিক টন প্লাস্টিক পরিবেশে গেলে কী ক্ষতিটাই না হয়, চিন্তা করতে পারেন! 

এর থেকে বাঁচার উপায়? বাঁচার উপায় হলাে বায়ােডিগ্রেডেবল প্লাস্টিক, যা পরিবেশে ফেলে দিলে পচে যাবে, ঠিক যেমন পচে যায় গাছের পাতা। আপনাকে হিসাব দিলেও আপনি নিশ্চয় বুঝতে পারবেন, সারা পৃথিবীতে প্লাস্টিকের চেয়ে বহুগুণ বেশি গাছের পাতা গজায় প্রতিবছর। সব পাতা তাে আমরা খাই না। তারপরও এই পাতাগুলাের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমাদের চিন্তা করতে হয় না। নানা অণুজীবের মাধ্যমে প্রাকৃতিকভাবেই পাতাগুলাে পচে যায়, মিশে যায় মাটির সঙ্গে। তার মানে প্লাস্টিকও যদি পচিয়ে ফেলা যায়, তবে কিন্তু সহজেই সমাধান করে ফেলা যেত এই সমস্যার। এই সমাধানই আছে এই তালিকায়।

প্লাস্টিক দেখতে খুব যান্ত্রিক যান্ত্রিক লাগলেও প্লাস্টিক কিন্তু তৈরি হয় একদম প্রাকৃতিক উপাদান থেকে। তা অবশ্য সবকিছুই হয়। কিন্তু প্লাস্টিকের মূল উপাদানগুলাের প্রায় পুরােটাই জৈব যৌগ, জৈবিক পদার্থ, যার বড় একটা উৎস। পচনশীল প্লাস্টিক আসলে একটা চক্রের সৃষ্টি করবে। প্রকৃতি থেকে তৈরি হবে, তারপর আবার প্রকৃতিতেই মিশে যাবে।

আমরা যে প্লাস্টিক ব্যবহার করি, তার প্রধান অংশের মূল উপাদান পেট্রোকেমিক্যাল। এই প্লাস্টিকগুলােই মূলত মাটিতে পড়লে পচে না। গলে যায় না। পচে যায়, এমন প্লাষ্টিকও বর্তমানে আছে। তার বেশির ভাগ তৈরি হয় ভুট্টা, আখ, ফেলে দেওয়া চর্বি বা ভেষজ তেল থেকে। তবে এই প্লাষ্টিকগুলাের স্ট্রেংথ খুব কম। অল্প চাপেই ভেঙে যায় বা বেঁকে যায়। অপটিক্যাল প্রপার্টি বা আলােক বৈশিষ্ট্যও ঠিক প্রতিদিনকার ব্যবহারের প্লাস্টিকের মতাে হয় না। তাই প্লাস্টিক হিসেবে ব্যবহার করা কঠিন হয়ে যায়।

আমরা যে পচনশীল প্লাস্টিকের কথা বলছি, সেই প্লাস্টিক তৈরি হবে সেলুলােজ বা লিগনিন থেকে। কাঠের উপাদানের প্রধান অংশ হলাে এই সেলুলােজ আর লিগনিন। একটা শুকনা কাঠের টুকরা হাতে নিলে আপনি প্রধানত সেলুলােজ আর লিগনিনই হাতে নিলেন। দুটোই পলিমার। ইদানীং বেশ কিছু গবেষণাতেই দেখা গেছে, সেলুলােজ বা লিগনিন থেকে প্লাস্টিক বানানাে যাবে, যেগুলাে হবে যথেষ্ট শক্ত, আলােক বৈশিষ্ট্যও ব্যবহার উপযােগী।

এখন পর্যন্ত বানানাে অধিকাংশ পচনশীল প্লাষ্টিকের। উৎসই কিন্তু খাদ্য। এখন ভুট্টা না খেয়ে আমরা যদি প্লাস্টিক বানাই, তবে সুন্দর প্লাস্টিকের যন্ত্রপাতি বা জিনিসপত্র হয়তাে হবে, তবে মানুষ খাবে কী? এ জন্য বিশ্বজুড়েই এর গ্রহণযােগ্যতা খুবই কম। সেলুলােজ, বা লিগনিন নিয়ে তাে এই সমস্যা নেই। দ্রুত বেড়ে ওঠে, এমন ঘাসও হতে পারে সেলুলােজ আর লিগনিনের উৎস। যেমন জায়ান্ট রিড। এই ঘাস হয়, এমন মাটিতেও যেখানে তেমন কোনাে খাওয়ার যােগ্য। ফসল ফলানাে সম্ভব নয়। সেলুলােজ কিন্তু আমরা মানুষেরা খেতেও পারি না, কারণ, সেলুলােজ হজমের এনজাইমই আমাদের পাকস্থলীতে নেই।

সেলুলােজ, লিগনিন পাওয়া যেতে পারে ফেলে দেওয়া কাঠ থেকেও। অনেক কাঠের টুকরাই কিন্তু আমরা ফেলে দিই। আবার খাদ্য উৎপাদনের যে বাই-প্রােডাক্ট, যেমন ধান কাটার পর খড় অথবা গম তুলে ফেলার পর অবশিষ্টাংশ, এগুলােও হতে পারে সেলুলােজ আর লিগনিনের উৎস।

গাছের কোষের দেয়াল বা কোষঝিল্লি সেলুলােজ দিয়ে তৈরি। আর লিগনিন হলাে কোষঝিল্লির ফাঁকা জায়গাগুলাে পূর্ণ করে যে পদার্থ, তা। এই লিগনিন কোষগুলাের মধ্যে স্ট্রেংথ এনে দেয়। তাই আমাদের শরীরও গাছের মতােই কোষ দিয়ে তৈরি হলেও আমাদের দেহ কিন্তু এমন শক্ত নয়, গাছের দেহ যেমন শক্ত। এর পেছনে আছে এই সেলুলােজ আর লিগনিনেরই ভূমিকা।

সেলুলােজ আর লিগনিন, দুটোই পলিমার। প্লাষ্টিকও পলিমার। পলিমার হলাে এমন পদার্থ, যার অণুগুলাে তৈরি হয়। ছােট ছােট কতগুলাে মনােমার দিয়ে। আরেকটু ব্যাখ্যা করা যাক।

আপনি যদি পানির সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম একক নেন, তবে তা হবে পানির অণু। এর মধ্যে দুইটা হাইড্রোজেন আর একটা অক্সিজেন থাকবে। এর থেকেও যদি ছােট করতে চান, তবে তা আর পানি থাকবে না, হয়ে যাবে অক্সিজেন আর হাইড্রোজেন, যে দুটো হলাে পরমাণু। এতে পানির কোনাে বৈশিষ্ট্যই আর আপনি পাবেন না।

অন্য সব পদার্থও এমন অণু দিয়েই তৈরি। প্লাস্টিক বা সেলুলােজও অণু দিয়েই তৈরি। কিন্তু এই অণুগুলাে বিশেষ ধরনের। এর প্রথম বৈশিষ্ট্য হলাে এগুলাের একেকটা অণুতে বিপুলসংখ্যক পরমাণু থাকে। শত শত, এমনকি লাখ লাখ পরমাণু থাকতে পারে। খুব শক্ত প্লাষ্টিকগুলাের একটা অণুতে এমনকি এক কোটি পরমাণুও থাকতে পারে। এই অণু ভেঙে ফেললে তা আর ওই প্লাষ্টিক থাকবে না। হয়ে যাবে অন্য পদার্থ। কিন্তু এখানেই মজার ব্যাপার।

এই যে একটা পলিমার অণুতে এতগুলাে পরমাণু, এগুলাে। কিন্তু একটা একটা মিলে এত বড় হয়নি। আবার একদম র‍্যান্ডম কিছুও নয়। আপনি এমন একটা অণু ভাঙলে ছােট ছােট কতগুলাে বিল্ডিং ব্লক পাবেন। খানিকটা একটি দেয়ালের মতাে। দেয়াল ভাঙলে আপনি পাবেন কতগুলাে ইট। একই রকম ইট।

একটা পলিমার অণু ভাঙলে একরকম ছােট ছােট কতগুলাে অংশ পাওয়া যায়, এগুলােকে বলে মনােমার। এক বা দুই রকম, কখনাে কখনাে তিন রকম মনােমার দিয়ে তৈরি হয় একটা পলিমার অণু। একই প্যাটার্নে কয়েক হাজার, এমনকি কয়েক কোটি, এমনকি কয়েক শ কোটি মনােমারও থাকতে পারে একটা অণুতে।

আপনার পরিচিত পলিমারের মধ্যে প্রথমেই তাে আছে প্লান্টিক। সেলুলােজ বা লিগনিন তাে আছেই। সরাসরি না দেখা আরেকটা পলিমার হলাে ডিএনএ। এ-টি-জি-সি হলাে ডিএনএর চারটা মনােমার। অর্থাৎ জীবনের প্রতিলিপি পুরােটা লেখা হয়েছে এই চার মনােমারেই!

যা-ই হােক, প্লাস্টিক আমরা বানাতে চাই সেলুলােজ বা লিগনিন দিয়ে। দুটি পলিমার দিয়ে। এক পলিমার দিয়ে আরেক পলিমার। দুটি যে ভিন্ন পলিমার, তা তাে বুঝতেই পারছেন। তাই এর মনােমার এবং মনােমারের গঠনেও কিছু ভিন্নতা তাে লাগবেই। এক পলিমার থেকে আরেক পলিমারে নিতে হলে সােজাসুজি কিন্তু কোনাে বুদ্ধি নেই। প্রথমে পলিমারটিকে ভেঙে ফেলতে হবে এর বিল্ডিং ব্লকে, মানে এর মনােমারে।

অতিসম্প্রতি বেশ কিছু গবেষণায় সেলুলােজ ওলিগনিনকে মনােমারে ভাঙার পদ্ধতি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে লিগনিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ লিগনিনের মনােমারে আছে একটি বিশেষ ধরনের রিং। অ্যারােমেটিক রিং। কার্বন-হাইড্রোজেন দিয়ে তৈরি এই রিংয়ের উপস্থিতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, অনেক স্ট্রেংথ এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্যওয়ালা প্লাস্টিক বানানাের জন্য।

লিগনিনের সমস্যা হলাে খুব সহজে দ্রবীভূত হয় না। যেকোনাে রাসায়নিক প্রক্রিয়ার প্রকৌশল করতে গেলে প্রথম শর্ত হলাে তাকে দ্রবীভূত করা। কারণ, দ্রবীভূত করতে পারলে সহজে অন্য যেকোনাে ফর্মে নেওয়ার কাজ করা যায়। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এ কাজেও সফল হয়েছেন। কিছু আয়নিক দ্রাবকে লিগনিন দ্রবীভূত হতে পারে। এই আয়নিক দ্রাবকগুলাে আবার পরিবেশবান্ধবও। এই দ্রাবকগুলাে কাঠ থেকে সিলেক্টিভলি লিগনিন আলাদা করে ফেলতে পারে।

লিগনিন আলাদা করে ফেললেও বাকি থাকে একে মনােমারে নেওয়া। কারণ, সরাসরি পলিমার থেকে পলিমার বানানাে যায় না। রাসায়নিক বিক্রিয়ার লিগনিন পলিমার ভাঙতে গেলে পুরাে যৌগটাই ভেঙে যায়। মনােমার হয় না। এ থেকে বাঁচার উপায় প্রাণরাসায়নিক প্রক্রিয়া।

এমনিতে লিগনিন ভেঙে ফেলে বিভিন্ন ফাঙ্গি বা ব্যাকটেরিয়া। পচে যাওয়ার সময়। ঠিক ওই প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া এনজাইমের মতাে এনজাইম তৈরি করা হয়েছে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং করে। এই এনজাইমগুলাে ভেঙে ফেলতে পারে দ্রবীভূত লিগনিনকে, লিগনিনের মনােমারে।

এই পদ্ধতিতে প্লাস্টিক বানানাের জন্য বেশ কিছু স্টার্টআপ ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে। মজার ব্যাপার হলাে, ফেসবুক বা গুগলের মতাে এসব স্টার্টআপের অনেকগুলাে ইউনিভার্সিটি থেকে স্পিন অফ করেই বের হয়েছে। যেমন ক্রাইস্যালিক্স টেকনােলজিস (Chrysalix Technologies) ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন থেকে বের হওয়া কোম্পানি। এই কোম্পানি একটা পদ্ধতি বের করেছে, যা দিয়ে অল্প খরচে আয়নিক দ্রাবক দিয়ে সহজেই লিগনিনকে আলাদা করে ফেলা যায়। ফিনল্যান্ডের এক কোম্পানি, মেটজেন অয়, এরা তৈরি করে জেনেটিকালি ইঞ্জিনিয়ার্ড এমন এনজাইম, যা বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া লিগনিনকে ভেঙে বিভিন্ন কার্যকর মনােমার বানাতে পারে, যেগুলাে আবার ব্যবহার করা যাবে অনেক ধরনের প্লাস্টিক তৈরিতে। 

আরেকটা কোম্পানি আছে মােবিয়াস, যাদের নাম আগে ছিল গ্রো বায়ােপ্লাস্টিক। এই কোম্পানি লিগনিন থেকে পচনশীল প্লাস্টিকের টুকরা (প্লাস্টিক পেলেট) বানায়। সাধারণত প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিগুলাে প্লাস্টিক পেলেট থেকেই সব ধরনের প্লাস্টিকের দ্রব্য বানায়। এসব প্লাস্টিক ব্যবহার করে ইতিমধ্যে ফুলদানি, বিভিন্ন কৃষিযন্ত্রের অংশ বানানাে শুরু হয়ে গেছে।

তার মানে কি হাতের কাছে চলে এসেছে পচনশীল প্লাস্টিক? না, একদম হাতের কাছেও আসেনি। কারণ প্রতিদিনকার ব্যবহারে আনতে চাইলে বেশ কতগুলাে সমস্যার সমাধান করতে হবে। চ্যালেঞ্জগুলাে উতরে যেতে হবে।

প্রথম চ্যালেঞ্জ অবশ্যই এর দাম। পচনশীল প্লাষ্টিকের দাম হাতের নাগালে আনতে হবে। তারপরেই আছে লিগনিনের উৎস। লিগনিন যদিও খুব সহজে উৎপাদন করা যাবে, তারপরও লিগনিন উৎপাদনে যাতে বিপুল জমি না লাগে, তা নিশ্চিত করতে হবে। এমনকি লিগনিনের প্রধান উৎস হিসেবে ময়লা- আবর্জনাকেই টার্গেট করা হয়, তাতেও বিপুল পরিমাণ পানি লাগবে। এটাও একটা চ্যালেঞ্জ বটে। আরেকটা চ্যালেঞ্জ হবে, ময়লা-আবর্জনা কীভাবে সংগ্রহ হবে। বর্তমানে যেভাবে সংগ্রহ হয়, সেভাবেই না হলে সমস্যা। বড় পরিবর্তন করা কঠিন।

সর্বশেষ চ্যালেঞ্জ থাকবে, কীভাবে এই প্লাস্টিক পচবে। প্লাস্টিকগুলাে কোথায় ফেলা যাবে, সেটাও একটা বড় প্রশ্ন। বর্তমানে পচনশীল দ্রব্য, যেমন সবজি বা খাবারের উচ্ছিষ্ট অংশ যেভাবে সহজেই ফেলে দেওয়া যায়, ল্যান্ড ফিলিং করা যায়, সেভাবেই পচনশীল প্লাস্টিক ফেলা যাবে কি না, তা-ও একটা বড় চ্যালেঞ্জ।

এসব চ্যালেঞ্জ জয় করা খুব একটা কঠিন হবে না হয়তাে। তাই বলাই যায়, অল্প কিছুদিনেই হয়তাে আপনার সামনে থাকা প্লাস্টিকের প্রতি এত বিতৃষ্ণা বা ভয় নিয়ে তাকাতে হবে না। কারণ ওই প্লাস্টিক পরিবেশের বারােটা বাজাবে না। আপনাকে দেখতে হবে না সাগরের পাড়ে মরে থাকা কোনাে বকের ছবি, যার পেটভর্তি প্লাস্টিক। কারণ ওই প্লাস্টিক খেয়ে দেখা যাবে বক সুন্দর হজম করে ফেলবে।

কে জানে, একদিন হয়তাে আপনার লাঞ্চে যে প্লাস্টিকের বক্স দেবে, ওইটা চাইলে টুক টুক করে চিবুতে চিবুতে খেয়েও ফেলতে পারবেন! পচনশীল বস্তু তা হজমও হয়ে যেতে পারে! যদিও এটা একটু কষ্ট-কল্পনাই!


লেখক  : ইবরাহিম মুদ্দাসসের
সংগৃহীত  : বিজ্ঞানচিন্তা ম্যাগাজিন

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন